• সোমবার, ০২ ডিসেম্বর ২০২৪, ১০:৩০ অপরাহ্ন
শিরোনাম:
সংস্কার নিয়ে কারও চিন্তা করার দরকার নেই, সংস্কার আমরা করবো বাতিল হলো বিদ্যুৎ-জ্বালানির বিশেষ বিধান আইন মেডিকেলে ভর্তিতে ‘অটোমেশন’ বাতিলের দাবিতে মানববন্ধন খালেদা জিয়ার সঙ্গে তারেকের পররাষ্ট্রবিষয়ক উপদেষ্টার সাক্ষাৎ ‘চিত্রকর্মগুলো তরুণ প্রজন্মের সৃজনশীলতার এক উজ্জ্বল উদাহরণ’ জেনেভায় আসিফ নজরুলকে হেনস্তা, মিশনের শ্রম কাউন্সেলরকে ‘স্ট্যান্ড রিলিজ’ মা নেই, কারাগারে বাবা : শিশুদের দেখভাল করতে হাইকোর্টের নির্দেশ সংস্কারের গতি ঠিক করবে নির্বাচন কত দ্রুত হবে : এএফপিকে প্রধান উপদেষ্টা সাগর-রুনি হত্যার ৩২০১ পৃষ্ঠার নথি পেয়েছে পিবিআই সম্প্রীতি বজায় রাখতে সেনাবাহিনী সদা প্রস্তুত: সেনাপ্রধান

প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে এরদোয়ানের প্রতিদ্বন্দ্বী কে এই ‘তুরস্কের গান্ধী

24live@21
আপডেটঃ : মঙ্গলবার, ৭ মার্চ, ২০২৩

তুরস্কের আসন্ন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে রিসেপ তাইয়েপ এরদোয়ানকে চ্যালেঞ্জ জানাতে দেশটির বিরোধীরা অবশেষ একক প্রার্থী ঠিক করলেন। তাঁর নাম কামাল কিলিচদারোগ্লু। তিনি ‘তুরস্কের গান্ধী’ নামে পরিচিত।

আগামী ১৪ মে তুরস্কে প্রেসিডেন্ট ও পার্লামেন্ট নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। এই নির্বাচন সামনে রেখে দেশটির ছয়টি বিরোধী দল জোট গঠন করে। কিন্তু এই জোট বর্তমান প্রেসিডেন্ট এরদোয়ানের বিপক্ষে লড়ার জন্য একক প্রার্থী ঠিক করতে পারছিল না। এ নিয়ে নিয়ে তীব্র তর্কবিতর্কের পর গতকাল সোমবার ৬ দলীয় বিরোধী জোটের প্রেসিডেন্ট প্রার্থী হিসেবে কিলিচদারোগ্লুর নাম আনুষ্ঠানিকভাবে ঘোষণা করা হয়।

৭৪ বছর বয়সী কিলিচদারোগ্লু তুরস্কের রিপাবলিকান পিপলস পার্টির (সিএইচপি) চেয়ারম্যান। সিএইচপি একটি মধ্য-বামপন্থী দল। এটি তুরস্কের প্রধান ধর্মনিরপেক্ষ বিরোধী দল।

সিএইচপি প্রতিষ্ঠা করেন আধুনিক তুরস্কের রূপকার মোস্তফা কামাল আতাতুর্ক। তুরস্কের প্রাচীনতম এই রাজনৈতিক দল গত শতকের নব্বইয়ের দশক থেকে কেন্দ্রীয় ক্ষমতার বাইরে রয়েছে।

২০১০ সাল থেকে সিএইচপির নেতৃত্ব দিয়ে আসছেন কিলিচদারোগ্লু। তিনি তাঁর দলের ‘অনমনীয় অবস্থান’ বদল করেছেন। ডানপন্থী দলগুলোর সঙ্গে তিনি জোট করেছেন। স্কুল ও কর্মক্ষেত্রে নারীদের পর্দা করার অধিকার সমর্থন করেছেন।

কিলিচদারোগ্লুর জন্ম ১৯৪৮ সালে। তিনি একজন অর্থনীতিবিদ। রাজনীতিতে নাম লেখানোর আগে তিনি আমলা হিসেবে কাজ করেছেন। তিনি ২০০২ সালে পার্লামেন্ট সদস্য নির্বাচিত হন।

সিএইচপি-প্রধানের সাবেক ঘনিষ্ঠ সহকর্মী রিজা সেলিককোলের ভাষ্যমতে, কিলিচদারোগ্লু খুবই পরিশ্রমী, অত্যন্ত নিয়মনিষ্ঠ একজন মানুষ। অন্যদিকে, মৃদুভাষী আচরণের জন্য অনেকে তাঁকে ‘তুরস্কের গান্ধী’ বলে অভিহিত করেন।

তুরস্কের বর্তমান প্রেসিডেন্ট এরদোয়ান একজন ‘ক্যারিশমাটিক’ নেতা হিসেবে পরিচিত। তাঁর রাজনৈতিক দৃষ্টিভঙ্গি আগ্রাসী। এরদোয়ানের চেয়ে পুরোপুরি ভিন্ন দৃষ্টিভঙ্গির মানুষ কিলিচদারোগ্লু। তুরস্কের লোকজন তাঁকে শান্ত স্বভাবের মানুষ হিসেবে বর্ণনা করেন। তাঁদের ভাষ্য, ভারতীয় স্বাধীনতাসংগ্রামের নেতা, অহিংস আন্দোলনের পুরোধা মহাত্মা গান্ধীর সঙ্গে কিলিচদারোগ্লুর সাদৃশ্য রয়েছে।

বিরোধী জোটের প্রেসিডেন্ট প্রার্থী হিসেবে নাম ঘোষণার পর গতকাল কিলিচদারোগ্লু তাঁর সমর্থকদের বলেন, ‘আমাদের টেবিল হলো শান্তির টেবিল। দেশকে সমৃদ্ধি, শান্তি ও আনন্দের দিনে নিয়ে যাওয়াই আমাদের একমাত্র লক্ষ্য।’

প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হলে ঐক্যের ভিত্তিতে, আলাপ-আলোচনার মাধ্যমে দেশ পরিচালনার অঙ্গীকার করেছেন কিলিচদারোগ্লু। অবশ্য কিলিচদারোগ্লুর কতিপয় সহযোগীর আশঙ্কা, ক্ষমতায় যাওয়ার সক্ষমতা তাঁর নেই।

মার্চ ফর জাস্টিস

‘নীরব শক্তি’ হিসেবে পরিচিত হতে পছন্দ করেন কিলিচদারোগ্লু। তিনি তাঁর বর্তমান ভাবমূর্তি গড়তে কঠোর পরিশ্রম করেছেন। তুরস্কের রাজনীতিতে নিজের একটি অর্থপূর্ণ প্রভাব তৈরি করতে তাঁর অনেক বছর সময় লেগেছে।
কিলিচদারোগ্লুর রাজনৈতিক জীবনে একটি গুরুত্বপূর্ণ সময় আসে ২০১৭ সালে। তখন এরদোয়ান সিএইচপির এক পার্লামেন্ট সদস্যকে জেলে পাঠালে প্রতিবাদে সরব হন কিলিচদারোগ্লু। তিনি তাঁর প্রতিবাদের অংশ হিসেবে আঙ্কারা থেকে ইস্তাম্বুল পর্যন্ত ‘মার্চ ফর জাস্টিস’ কর্মসূচি করেছিলেন। এই কর্মসূচিই তাঁকে জনপ্রিয়তা এনে দেয়।
কিলিচদারোগ্লু যে সময় এই কর্মসূচি শুরু করেন, তখন তুরস্কের খুব কম লোকই এরদোয়ানের বিপক্ষে দাঁড়ানোর সাহস করেছিলেন। তুরস্কে ২০১৬ সালের ব্যর্থ অভ্যুত্থানের পরিপ্রেক্ষিতে তখন এরদোয়ান ‘শুদ্ধি’ অভিযানের নামে ব্যাপকভাবে ধরপাকড় চালাচ্ছিলেন।

মার্চ ফর জাস্টিস’ করার কারণে কিলিচদারোগ্লুর একটি বিশেষ ভাবমূর্তি তৈরি হয়। এই কর্মসূচির মধ্য দিয়ে তিনি এরদোয়ানের মুখোমুখি হতে ভয় পান না—এমন একজন তুর্কি নেতা হিসেবে আবির্ভূত হন।
কিলিচদারোগ্লু ২০০৯ সালে ইস্তাম্বুলের মেয়র পদে লড়ে ব্যর্থ হয়েছিলেন। তবে ২০১৯ সালে আঙ্কারা, ইস্তাম্বুলসহ তুরস্কের গুরুত্বপূর্ণ শহরগুলোয় অনুষ্ঠিত স্থানীয় সরকার নির্বাচনে তাঁর দল জয়ী হয়। এই জয়ের মধ্য দিয়ে শহরগুলোয় এরদোয়ানের দলের দীর্ঘ দিনের শাসনের অবসান ঘটে। এই অপ্রত্যাশিত জয়ে কিলিচদারোগ্লুর আত্মবিশ্বাস বেড়ে যায়। অপরাজেয় হিসেবে তুরস্কের রাজনীতিতে এরদোয়ানের যে আভা তৈরি হয়েছিল, তাতে ফাটল ধরান কিলিচদারোগ্লু। আগামী প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে তিনি এরদোয়ানকে তাঁর রাজনৈতিক জীবনের সবচেয়ে কঠিন পরীক্ষার মুখে ফেলতে পারেন বলে ধারণা করা হচ্ছে।
সূত্র :প্রথম আলো


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই ক্যাটাগরির আরো নিউজ