শুধু অসাধু ব্যবসায়ীরা নয়, একবারে বেশি কেনাকে রোজার মাসে দ্রব্যমূল্যের বাড়ার কারণ হিসেবে উল্লেখ করেছেন বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি।
মঙ্গলবার বিশ্ব ভোক্তা অধিকার দিবস উপলক্ষে এক সংবাদ সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন। এ সময় বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের জ্যেষ্ঠ সচিব তপন কান্তি ঘোষ। এটি সঞ্চালনা করেন ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক (ডিজি) এএইচএম সফিকুজ্জামান। বুধবার বিশ্ব ভোক্তা অধিকার দিবস পালিত হবে।
বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, ‘হুমড়ি খেয়ে পড়ে যেন কেউ ঝামেলা সৃষ্টি না করেন। রমজান এলে এক সপ্তাহ আগেই যেন কেউ এক মাসের বাজার করে না ফেলেন। এটা কিন্তু দ্রব্যমূল্যের দাম বাড়ার অনেক বড় একটা কারণ। এতে করে বাজারে চাহিদা বাড়ে, আর এই সুযোগটা নেয় ব্যবসায়ীরা। তাই সবাই ধৈর্য ধরে বাজার করবেন। সাংবাদিক ভাইয়েরা অনুসন্ধানী প্রতিবেদন করবেন। কোথাও কেউ মজুদ রেখেছেন কি না তা আপনারা বের করবেন। দরকার হলে পুলিশের সাহায্য নেবেন।
রোজা এলেই কিছু ব্যবসায়ী লাভ করার জন্য মুখিয়ে থাকে উল্লেখ করে বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা ব্যবসায়ীদের জানিয়েছি যেন অন্তত রমজানে তারা সুযোগ না নেন। তারা যেন দ্রব্যমূল্যের দাম নিয়ন্ত্রণের মধ্যে রাখেন। রোজাকে সামনে রেখে আমরা টিসিবিতে দুইটা আইটেম বাড়িয়েছি। ছোলা ও খেঁজুর আমরা টিসিবিতে যুক্ত করেছি।’
টিপু মুনশি বলেন, ‘দাম বাড়ার ক্ষেত্রে কাউকে এককভাবে দায়ী করা যাবে না। একজন ব্যবসায়ী যখন দেখেন অন্য দেশ থেকে পেঁয়াজ আমদানি বন্ধ, তখন কিন্তু তিনি দাম ৫০ টাকা থেকে বাড়িয়ে থেকে ৮০ টাকা কেজি করে দেন। এভাবেই একেকটা পণ্যের দাম বাড়ে। এজন্য আমাদের মানসিকতার বদলানোর প্রয়োজন। আমরা তো আর কাউকে ঘাড় ধরে বলতে পারি না। বিশ্ববাজারে একটা পণ্যের দাম কমানো হলে তো ঘরে আসতে আসতে সময় লাগে। এগুলো নিয়ে আসলে ঝামেলা থাকবেই। দাম বাড়লে ব্যবসায়ীরা সাথে সাথে বাড়িয়ে দেয়। কারণ তখন তারা কেউ নিয়ম মানেন না।
ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক সফিকুজ্জামান বলেন, ‘আইন করে ভোক্তাদের ক্রয়-বিক্রয়ের রশিদ দেয়া বাধ্যতামূলক করতে কাজ করছি। মামলা অনুযায়ী আমাদের নিষ্পত্তির হারও ভালো। আমরা কনজ্যুমার কমপ্লেইন ম্যানেজমেন্ট সিস্টেম (সিসিএমএস) চালু করেছি। এর মাধ্যমে ভোক্তা যেকোনো জায়গা থেকে তার অভিযোগ করতে পারবে।’
বিশ্ব ভোক্তা অধিকার দিবস ২০২৩ উপলক্ষে একযোগে কেন্দ্রীয়, বিভাগীয়, জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে বিভিন্ন কর্মসূচি গ্রহণ করেছে ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর। এগুলো হচ্ছে- ঢাকা মহানগরসহ জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে আলোচনা সভা, ক্রোড়পত্র প্রকাশ, স্মরণিকা প্রকাশ, সিসিএমএস সফটওয়্যার পাইলটিং পর্যায়ে উদ্বোধন, ভোক্তা বাতায়ন-২০২৩ শীর্ষক স্মরণিকার মোড়ক উন্মোচন, বিশ্ব ভোক্তা অধিকার দিবস-২০২৩ উপলক্ষে আয়োজিত রচনা প্রতিযোগিতায় বিজয়ীদের মধ্যে পুরস্কার বিতরণ, প্রামাণ্যচিত্র প্রদর্শন এবং মোবাইল অপারেটরদের মাধ্যমে ভোক্তাদের নিকট খুদে বার্তা প্রেরণ।
সূত্র :দৈনিক বাংলা