• বুধবার, ০৪ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৩:৩৭ অপরাহ্ন
শিরোনাম:
বেনজীর আহমেদের ক্যাশিয়ার জসীম গ্রেফতার এটা কোন ধরনের প্রতিবেশীসুলভ আচরণ, ভারতের আচরণ প্রসঙ্গে মির্জা ফখরুল ভারতকে বাংলাদেশের জনগণের কাছে ক্ষমা চাইতে হবে: খেলাফত মজলিস বাংলাদেশের সহকারী হাইকমিশনে হামলার প্রতিবাদে বিএনপির বিক্ষোভ সীমান্তে যে কোনো অপতৎপরতা রোধে প্রস্তুত বিজিবি ভারতকেই শান্তিরক্ষা বাহিনীর সহায়তা নেওয়ার কথা বললেন উপদেষ্টা আসিফ চিন্ময়ের পক্ষে ছিলেন না আইনজীবী, জামিন শুনানি পেছালো দুর্নীতির শীর্ষে পাসপোর্ট-বিআরটিএ-আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী সংস্থা : টিআইবি সংস্কার নিয়ে কারও চিন্তা করার দরকার নেই, সংস্কার আমরা করবো বাতিল হলো বিদ্যুৎ-জ্বালানির বিশেষ বিধান আইন

শেয়ারবাজারে কারসাজি করলে সম্পদ বাজেয়াপ্ত, ১০ বছরের জেল

24live@21
আপডেটঃ : মঙ্গলবার, ২১ মার্চ, ২০২৩

শেয়ারবাজারে যেন ওত পেতে থাকে কারসাজি চক্র। কীভাবে সাধারণ বিনিয়োগকারীদের ঠকিয়ে তারা অর্থ হাতিয়ে নেবে এজন্য নিত্যনতুন পদ্ধতি অবলম্বন করে।এবার এই কারসাজি চক্রের জন্য বড় ধরনের দুঃসংবাদ আসছে। শেয়ারবাজারে কারসাজি বা প্রতারণামূলক কর্মকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত ব্যক্তির অর্জিত সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করা হবে। এছাড়া সর্বোচ্চ ১০ বছরের কারাদণ্ড বা সর্বনিম্ন ১০ লাখ টাকা জরিমানা বা উভয় দণ্ড দেওয়া হবে। বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন আইন-২০২২ নামে প্রস্তাবিত নতুন আইনে এ বিধান রাখা হয়েছে।

সম্প্রতি অর্থ মন্ত্রণালয়ের আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগ আইনের খসড়া প্রকাশ করেছে। প্রস্তাবিত এই আইনে আরো বলা হয়েছে, পুঁজিবাজারে প্রতারক ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান কিংবা সংঘবদ্ধ গোষ্ঠী এককভাবে অথবা সম্মিলিতভাবে কোনো কারসাজি বা প্রতারণার কারণে যেসব বিনিয়োগকারী ক্ষতিগ্রস্ত হবেন, তারা এর দ্বারা সৃষ্ট আর্থিক ক্ষতির দ্বিগুণ অর্থ পাবেন।

শেয়ারবাজার সংশ্লিষ্টরা বলেছেন, দেশের শেয়ারবাজারের আকার দিনদিন বড় হচ্ছে। সেই সঙ্গে প্রতারক চক্র সাধারণ বিনিয়োগকারীদের ঠকানোর জন্য নিত্যনতুন কৌশল বের করছে। এতে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে শেয়ারবাজার। তাই আইনকে সময়োপযোগী করলে কারসাজি করে কেউ পার পাবে না। এতে বাজারের প্রতিও বিনিয়োগকারীদের আস্থা বাড়বে। শক্তিশালী হবে দেশের পুঁজিবাজার।

প্রস্তাবিত খসড়া আইন পর্যালোচনা করে দেখা গেছে, কারসাজিতে জড়িত ব্যক্তির শান্তির দ্বন্দ্ব দ্বিগুণ করা হয়েছে। আগে কমিশন আইন ১৯৯৩-এ শাস্তির বিধান ছিল পাঁচ বছর সশ্রম কারাদণ্ড, ৫ লাখ টাকা অর্থদণ্ড অথবা উভয় দণ্ড। নতুন আইনে তা বাড়িয়ে ১০ বছর এবং ১০ লাখ টাকা অথবা উভয় দণ্ড আরোপ করা হয়েছে। এছাড়া আগে কারসাজি করে অর্জিত সম্পদ বাজেয়াপ্তের বিধান না থাকলেও নতুন প্রস্তাবিত আইনে সম্পদ বাজেয়াপ্তের ক্ষমতা রাখা হয়েছে। প্রস্তাবিত আইনে শেয়ারবাজারে প্রতারণামূলক কাজ, অসাধু ব্যবসা ও কারসাজি বন্ধ এবং মালিকপক্ষ ও দায়িত্বশীল ঊর্ধ্বতনদের প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে শেয়ার ব্যবসা (ইনসাইডার ট্রেড) বন্ধে তথ্য উদ্ঘাটনের জন্য নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি) গোয়েন্দা কার্যক্রম পরিচালনা করতে পারবে ; যা আগে ছিল না। খসড়া আইনে শেয়ারবাজারসংশ্লিষ্ট কোনো কোম্পানি বা প্রতিষ্ঠান দেউলিয়া হলেও তার জিম্মায় থাকায় কোনো বিনিয়োগকারীর সম্পদ কোম্পানি বা প্রতিষ্ঠানটির ‘পরিসম্পদ’ হিসেবে গণ্য করা বা অন্যের দায় মেটাতে ব্যবহার করা যাবে না বলে বলা হয়েছে। শেয়ারবাজারের বিনিয়োগকারীদের সুরক্ষা দিতে এ প্রস্তাব রাখা হয়েছে।

নতুন প্রস্তাবিত এই আইনে নিয়ন্ত্রক সংস্থাকে এড়িয়ে তালিকাভুক্ত কোম্পানির সঙ্গে অ-তালিকাভুক্ত কোম্পানির একীভূতকরণ, অঙ্গীভূতকরণ বা পুনর্গঠন নিয়ন্ত্রণেরও ক্ষমতা কমিশনকে দেওয়া হয়েছে। একই সঙ্গে আর্থিক হিসাব নিরীক্ষক বা সম্পদ মূল্যায়নকারী প্রতিষ্ঠানের কার্যক্রম নিরূপণ ও নিয়ন্ত্রণ করা, মানি লন্ডারিং প্রতিরোধ আইনে বর্ণিত অপরাধ শেয়ারবাজারে সংঘটিত হলে অনুসন্ধান, তদন্ত ও মামলা পরিচালনার দায়িত্ব পালনের ক্ষমতা কমিশনকে দেওয়ার প্রস্তাব করা হয়েছে।

প্রস্তাবিত খসড়া আইনে আরো বলা হয়েছে, ধরন বিবেচনায় স্টক এক্সচেঞ্জের সঙ্গে পরামর্শ করে এবং সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানকে বক্তব্য রাখার সুযোগ দিয়ে কোনো সিকিউরিটির (শেয়ার, বন্ড ইত্যাদি) বাধ্যতামূলক তালিকাভুক্তির নির্দেশ দিতে পারবে বিএসইসি। তালিকাভুক্ত কোম্পানির সুবিধাভোগী হিসেবে বিবেচিত (পরিচালক বা কর্মকর্তা বা কর্মচারী) বা কমপক্ষে ১০ শতাংশ মালিকানা রয়েছে এমন ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানের স্বার্থসংশ্লিষ্ট বা পারিবারিকভাবে সম্পর্কিত বা ঘনিষ্ঠ কেউ ওই শেয়ারের ওপর নিয়ন্ত্রণ রাখলে তাকেও কমিশন নির্ধারিত ফরমে মালিকানা সম্পর্কিত রিটার্ন জমার বাধ্যবাধকতা আরোপ করতে পারবে। এমন ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানের ক্ষেত্রে শর্ট-সেলিং প্রথাও নিষিদ্ধ করার প্রস্তাব করা হয়েছে।

প্রস্তাবিত বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন আইন-২০২২ প্রসঙ্গে বিএসইসির নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র মোহাম্মদ রেজাউল করিম গতকাল ইত্তেফাককে বলেন, প্রস্তাবিত নতুন আইনে কারসাজিতে জড়িতদের শাস্তির পরিমান দ্বিগুণ করার পাশাপাশি অনেক বিষয় স্পষ্টকরণ করা হয়েছে। যা পুঁজিবাজারে কারসাজিরোধে বড় ভূমিকা রাখবে। এ প্রসঙ্গে পুঁজিবাজার বিশ্লেষক ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক অধ্যাপক অর্থনীতিবিদ আবু আহমেদ ইত্তেফাককে জানান, বর্তমানে দেশের পুঁজিবাজারের আকার আগের চেয়ে অনেক বড় হয়েছে। সময়ের সঙ্গে তাল মিলিয়ে পুঁজিবাজার-সংশ্লিষ্ট আইনও যুগোপযোগী করতে হবে। প্রস্তাবিত নতুন আইন পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রণে ও কারসাজিরোধে বড় ভূমিকা রাখবে বলে আশা করছি।

সূত্র :দৈনিক ইওেফাক


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই ক্যাটাগরির আরো নিউজ