হোমল্যান্ড লাইফ ইন্সুরেন্সের গ্রাহকদের ১০৪ কোটি ৬ লাখ ৩৮ হাজার ৬৭৮ টাকা টাকা লোপাটের ঘটনা তদন্ত করে হলফ আকারে প্রতিবেদন দাখিলে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) ও বীমা উন্নয়ন কর্তৃপক্ষকে নির্দেশ দিয়েছে হাইকোর্ট।
বিচারপতি মো: নজরুল ইসলাম তালুকদার ও বিচারপতি খিজির হায়াত সমন্বয়ে গঠিত একটি হাইকোর্ট ডিভিশন বেঞ্চ এ আদেশ দেন। আদালতের আদেশের কপি পেয়ে বিষয়টি আজ সাংবাদিকদের জানান রিটকারীর আইনজীবী।
প্রতিষ্ঠানটির ১৪ গ্রাহকের পক্ষে রহিমা আক্তারের আনা রিটের শুনানি নিয়ে ২৯ মার্চ আদেশ দেন হাইকোর্ট। একটি জাতীয় দৈনিকে ‘পরিচালকদের প্রতারণার খপ্পরে হোমল্যান্ড লাইফ’ শিরোনামে গত ২৭ ফেব্রুয়ারি একটি প্রতিবেদন প্রকাশ হয়। এছাড়াও প্রতিষ্ঠানটির অর্থ আত্মসাত নিয়ে বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রতিবেদন প্রকাশ হয়। এই সব প্রতিবেদন যুক্ত করে হাইকোর্টে রিটটি দায়ের করা হয়। রিটে অর্থ সচিব, ইন্সরেন্স ডেভেলপমেন্ট অ্যান্ড রেগুলিটরি অথোরিটির চেয়ারম্যান, দুর্ণীতি দমন কমিশনের (দুদক) চেয়ারম্যান, হোমল্যান্ড ইন্সুরেন্সের চেয়ারম্যান ও ভাইস চেয়ারম্যানসহ প্রতিষ্ঠানটির ১৪ পরিচালককে বিবাদী (রেসপনডেন্ট) করা হয়।
রিটকারিদের পক্ষে আইনজীবী ছিলেন ব্যারিস্টার মো: রুহুল কুদ্দুস কাজল ও আব্দুল্লাহিল মারুফ ফাহিম। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি এটর্নি জেনারেল এ কে এম আমিন উদ্দিন মানিক। দুর্নীতি দমন কমিশনের পক্ষে ছিলেন ব্যারিস্টার মো: সাজ্জাদ হোসেন।
দুদকের আইনজীবী ব্যারিস্টার মো: সাজ্জাদ হোসেন আদালতের আদেশের বিষয়টি জানান।
তিনি বলেন, হোমল্যান্ড লাইফ ইন্সুরেন্সের ১০৪ কোটি ৬ লাখ ৩৮ হাজার ৬৭৮ টাকা লোপাটের অভিযোগ তদন্ত করে দুই মাসের (৬০ দিন) মধ্যে হলফ আকারে প্রতিবেদন দাখিলে দুদক ও বীমা উন্নয়ন কর্তৃপক্ষকে নির্দেশ দিয়েছেন আদালত। দুদক ও বীমা উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ বরাবর রিট দায়েরকারীদের আবেদন দুই মাসের মধ্যে নিস্পত্তির নির্দেশ দিয়েছেন আদালত। ওই অর্থ লোপাটের বিষয় যা কোম্পানিটির ১৩১ তম বোর্ডসভায় উপস্থাপিত হয় তা তদন্তের কেন নির্দেশ দেয়া হবে না- দুই সপ্তাহের মধ্যে কারণ দর্শাতে সংশ্লিষ্টদের প্রতি রুল জারি করেছে আদালত। এ রুল শুনানির সময় এফিডেভিট ইন অপজিশন দাখিলে দুদক আইনজীবীকে নির্দেশ দিয়েছেন আদালত। আগামী ৪ জুন মামলাটি শুনানি ও পরবর্তী আদেশের জন্য কার্যতালিকায় থাকবে।
হোমল্যান্ড লাইফ ইন্সুরেন্সের ১০৪ কোটি টাকা লোপাট বিষয়ে বিভিন্ন গনমাধ্যমে প্রকাশিত প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, লন্ডন প্রবাসী সিলেটের পরিচালকদের একটি গ্রুপে প্রতারণার খপ্পরে হোম ল্যান্ড লাইফ ইন্সুরেন্স। গুরুত্বপূর্ণ বিভিন্ন সিদ্ধান্ত নিতে সিলেটেই করতে পরিচালনা পর্ষদের বৈঠক। এই গ্রুপটি কোম্পানীর তহবিল থেকে জালিয়াতির মাধ্যমে ১০৪ কোটি টাকা আত্মসাতের প্রমাণ পাওয়া গেছে। অনুসন্ধানে এমন চাঞ্চল্যকর তথ্য উঠে এসেছে। বোর্ড সভার কার্যবিবরণী জালিয়াতি, জমি ক্রয়ে ভুয়া নথি তৈরি, কমিশন ও অন্যান্য খাতে খরচের ভাউচার তৈরি করে এসব টাকা আত্মসাত করা হয়। নথিপত্রে দেখা গেছে-এই প্রতিষ্ঠানের নামে অস্তিত্ববিহীন জমি কেনা হয়েছে। আবার সেই জমিতে মাটি ভরাট ও কাটা তারের বেড়া তৈরির নামে আরও অর্থ লোপাট করা হয়েছে।
সূত্র :বাসস