মার্কিন ডলারের বিপরীতে পাকিস্তানি রুপির আরও দরপতন হয়েছে। আজ বুধবার দেশটির আন্তব্যাংক লেনদেনে ডলারের দর দাঁড়িয়েছে ২৯০ রুপি। এর আগে ডলারের সর্বোচ্চ দর ছিল ২৮৮ দশমিক ৪২ রুপি; অর্থাৎ রুপির মান এখন দেশটির ইতিহাসের সর্বনিম্ন পর্যায়ে।
পাকিস্তানের সংবাদমাধ্যম জিও নিউজের এক সংবাদে বলা হয়েছে, দুর্নীতির মামলায় দেশটির সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানকে গ্রেপ্তার করার পরদিন আজ রুপির দরপতন হয়েছে। ইমরান খানকে গ্রেপ্তারের প্রতিবাদে পাকিস্তানজুড়ে সহিংস বিক্ষোভ-সমাবেশ চলছে।
পাকিস্তান-কুয়েত ইনভেস্টমেন্ট কোম্পানির গবেষণাপ্রধান সামিউল্লাহ তারিক জিও ডট টিভিকে বলেছেন, আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) বেলআউট নিয়ে অনিশ্চয়তা ও রাজনৈতিক ডামাডোলের কারণে রুপির এই দরপতন হয়েছে। তিনি মনে করেন, এটা বাজারের চাহিদা–সরবরাহের বিষয় নয়; অনিশ্চয়তার কারণে এমনটা হচ্ছে।
মুডিস ইনভেস্টর সার্ভিস ও ব্লুমমার্গের প্রকাশিত খবরের সূত্র ধরে ইকোনমিক টাইমস জানিয়েছে, পাকিস্তানের বিদেশি মুদ্রার রিজার্ভ ৪৫০ কোটি ডলারে নেমেছে। এই অর্থ দিয়ে এক মাসের আমদানি ব্যয় মেটানো সম্ভব। এই পরিস্থিতিতে জুন মাসের পর আমদানি ব্যয় পরিশোধ করা কঠিন হয়ে পড়বে বলে মনে করছেন মুডিস ইনভেস্টরের সার্বভৌম বিশ্লেষক গ্রেস লিম। আইএমএফের ঋণ না পেলে দেশটির পরিস্থিতি সঙিন হয়ে পড়বে।
ডলারের বিনিময় হার বৃদ্ধির কারণে পাকিস্তান আগেই আমদানি সীমিত করেছে। এখন রুপির আরও দরপতনের কারণে দেশটির নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দাম স্বাভাবিকভাবেই বাড়বে। মানুষের বিপদ বাড়বে আরও। নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের সংকটও হতে পারে।
বিশ্লেষকেরা বলছেন, অক্ষমতার শেষ প্রান্তে পৌঁছে গেছে পাকিস্তান। ২০২২ সালের প্রবল বন্যা ও ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধের ফলে দেশটিতে খাদ্য ও জ্বালানি সরবরাহ ব্যাহত হয়। এ দুটি কারণে পাকিস্তানের অর্থনৈতিক সংকট তীব্র করেছে। সেই সঙ্গে এখন যুক্ত হয়েছে রাজনৈতিক অস্থিরতা, যার মূল্য দিতে হচ্ছে দেশটির সাধারণ মানুষকে।
অথচ একসময় ভারতের চেয়ে পাকিস্তানে মাথাপিছু আয় ছিল বেশি। কিন্তু ভুল নীতি ও সামরিক শাসনের অভিঘাতে পাকিস্তান এখন অনেকটাই পিছিয়ে। স্বাধীনতার পর এ পর্যন্ত তারা ২৩ বার আইএমএফের সহায়তা নিয়েছে। আর কোনো দেশ এই সময়ে এতবার আইএমএফের কাছে যায়নি। বাংলাদেশও বেশির ভাগ সূচকে পাকিস্তানের চেয়ে এগিয়ে।
সূত্র : প্রথম আলো