বঙ্গোপসাগরে সৃষ্টি হওয়া গভীর নিম্নচাপটি আজ বুধবার সন্ধ্যা নাগাদ ঘূর্ণিঝড়ে রূপ নিতে পারে। আজ বেলা ১১টায় প্রথম আলোকে এ তথ্য জানান আবহাওয়া অধিদপ্তরের পরিচালক মো. আজিজুর রহমান। তিনি বলেন, এই ঘূর্ণিঝড়ের নাম দেওয়া হয়েছে ‘মোখা’।
এর আগে আবহাওয়া অধিদপ্তর আজ সকালে বিশেষ বার্তায় জানায়, বঙ্গোপসাগরে থাকা নিম্নচাপটি এখন গভীর নিম্নচাপে পরিণত হয়েছে। এখন এর সর্বোচ্চ গতিবেগ ঘণ্টায় ৫০ কিলোমিটার। এটি প্রতিমুহূর্তে বাড়ছে। আর গভীর নিম্নচাপকেন্দ্রের কাছের সাগর উত্তাল অবস্থায় আছে। এ পরিস্থিতির কারণে দেশের চারটি সমুদ্রবন্দরকে ১ নম্বর দূরবর্তী সতর্কসংকেত দেখাতে বলা হয়েছে। সেই সঙ্গে উপকূলের কাছাকাছি থাকতে বলা হয়েছে মাছ ধরার নৌকা ও ট্রলারগুলোকে।
আজ আবহাওয়া অধিদপ্তরের পরিচালক মো. আজিজুর রহমান বলেন, ‘গভীর নিম্নচাপটি এখন দক্ষিণ-পূর্ব বঙ্গোপসাগরে আছে। এখন এর গতিপথ পশ্চিম ও উত্তর–পশ্চিমমুখী। কাল পর্যন্ত এটি এভাবেই চলবে। এরপর যখন সাগরের কেন্দ্রে চলে আসবে, তখন আশঙ্কা করছি, এটি উত্তর ও উত্তর–পূর্ব দিকে অগ্রসর হবে। অর্থাৎ, আমাদের কক্সবাজার ও মিয়ানমার উপকূলের মাঝামাঝি দিয়ে অতিক্রমের সম্ভাবনা আছে ১৪ মে।’
আজিজুর রহমান আরও বলেন, ‘ঘূর্ণিঝড়টি তৈরি হলে বাংলাদেশের দক্ষিণ-পূর্ব উপকূল এবং মিয়ানমারের উত্তর উপকূল দিয়ে তা অতিক্রম করতে পারে আগামী ১৪ মে রোববার বিকেল বা সন্ধ্যা নাগাদ। তবে এটি যখন ঘূর্ণিঝড়ে রূপ নেবে, তখন আরও স্পষ্ট করে এর গতিপথ বোঝা যাবে।’
আজিজুর রহমান বলেন, ‘রোববার সন্ধ্যায় ঘূর্ণিঝড়টির কেন্দ্র বাংলাদেশ অংশে আঘাত হানতে পারে। এর অগ্রবর্তী অংশ আরও ১২ ঘণ্টা আগেই স্পর্শ করবে।’
২ মে আবহাওয়া অধিদপ্তর চলতি মে মাসের দীর্ঘমেয়াদি আবহাওয়ার পূর্বাভাস দেয়। সেখানে বলা হয়, এ মাসে একাধিক লঘুচাপ এবং সেখান থেকে নিম্নচাপ হতে পারে। আর সেই সঙ্গে একটি ঘূর্ণিঝড় হতে পারে।
কানাডার সাসকাচুয়ান বিশ্ববিদ্যালয়ের আবহাওয়া ও জলবায়ু গবেষক মোস্তফা কামাল (পলাশ) আজ প্রথম আলোকে বলেন, প্রধান-প্রধান আবহাওয়া পূর্বাভাস মডেল অনুসারে গভীর নিম্নচাপটি আজ দিনের মধ্যে ঘূর্ণিঝড়ে রূপ নিলে তা রোববার ভোর সকাল ৬ টার পর থেকে বাংলাদেশের দক্ষিণ-পূর্ব উপকূল স্পর্শ করতে পারে। সুনির্দিষ্টভাবে বলতে পারি, কক্সবাজার ও মিয়ানমারের রাখাইন অঞ্চল দিয়ে এটি অতিক্রম করার সম্ভাবনা বেশি। রোববার সকাল থেকেই এর অগ্রবর্তী অংশ এসব এলাকা স্পর্শ করতে পারে।
তবে মোস্তফা কামাল বলেন, ঘূর্ণিঝড়টির স্থল ভাগে আঘাতের এখনো চার দিন বাকি আছে। তাই এখনই শতভাগ নিশ্চয়তা দিয়ে বলা যাচ্ছে না যে বাংলাদেশের কক্সবাজার ও মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যের মংডু জেলার ওপর দিয়েই ঘূর্ণিঝড়টির কেন্দ্র স্থল ভাগে আঘাত করবে। ঘূর্ণিঝড়টির কেন্দ্র চট্টগ্রামের দিকে কিছুটা সরের আসার সম্ভাবনা নাকচ করে দেওয়া যাবে না এখনই। এত আগে ঘূর্ণিঝড়টির গতিবিধি নিশ্চিত করে বলা কঠিন। কাল বৃহস্পতিবার ঘূর্ণিঝড়টির গতিবিধি সম্বন্ধে আরও বেশি নিশ্চিত হওয়া যাবে।
সূত্র : প্রথম আলো