গত সপ্তাহজুড়ে দেশের শেয়ারবাজারে যে কয়েকটি প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের দাম কমেছে, বেড়েছে প্রায় তার দ্বিগুণের। এতে সপ্তাহের ব্যবধানে প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) বাজার মূলধন সাড়ে ৪ হাজার কোটি টাকার ওপরে বেড়ে গেছে। তবে কমেছে দৈনিক গড় লেনদেনের পরিমাণ। আর প্রধান মূল্য সূচক বাড়লেও, কমেছে ইসলামী শরিয়াহ ভিত্তিতে পরিচালিত কোম্পানি নিয়ে গঠিত সূচক।
দাম কমার থেকে দাম বাড়ার তালিকা বড় হলেও তালিকাভুক্ত অর্ধেকের বেশি প্রতিষ্ঠানের ক্রেতা সংকট ছিল গত সপ্তাহজুড়েই। ফলে দুশোর বেশি প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের দাম ফ্লোর প্রাইসে আটকে রয়েছে। ক্রেতা না থাকায় ফ্লোর প্রাইসে আটকে থাকা এসব প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিট বিক্রি করতে পারছেন না বিনিয়োগকারীরা।
এমন বাজারে সপ্তাহের শেষ কার্যদিবসের লেনদেন শেষে ডিএসইর বাজার মূলধন দাঁড়িয়েছে ৭ লাখ ৭০ হাজার ৬৩৭ কোটি টাকা। যা তার আগের সপ্তাহের শেষ কার্যদিবসে ছিল ৭ লাখ ৬৬ হাজার ১০৬ কোটি টাকা। অর্থাৎ সপ্তাহের ব্যবধানে ডিএসইর বাজার মূলধন বেড়েছে ৪ হাজার ৫৩১ কোটি টাকা বা দশমিক ৫৯ শতাংশ। বাজার মূলধন বাড়ার অর্থ তালিকাভুক্ত প্রতিষ্ঠানগুলোর শেয়ার ও ইউনিটের দাম সম্মেলিতভাবে ওই পরিমাণ বেড়েছে।
এদিকে, সপ্তাহজুড়ে ডিএসইতে মোট ৩৮৮টি প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিট লেননেদ হয়েছে। লেনদেনে অংশ নেওয়া এই প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে ১০৯টির শেয়ার ও ইউনিট দাম বাড়ার তালিকায় নাম লিখিয়েছে। বিপরীতে দাম কমেছে ৭৪টির। আর ২০৫টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে।
এতে ডিএসইর প্রধান মূল্য সূচক ডিএসইএক্স বেড়েছে ১৭ দশমিক ৭৭ পয়েন্ট বা দশমিক ২৮ শতাংশ। আগের সপ্তাহে সূচকটি বাড়ে ৩ দশমিক ২৭ পয়েন্ট বা দশমিক শূন্য ৫ শতাংশ।
প্রধান মূল্য সূচকের সঙ্গে বেড়েছে বাছাই করা ভালো কোম্পানি নিয়ে গঠিত ডিএসই-৩০ সূচক। সপ্তাহজুড়ে সূচকটি বেড়েছে দশমিক ৯৩ পয়েন্ট বা দশমিক শূন্য ৪ শতাংশ। আগের সপ্তাহে সূচকটি কমে ১০ দশমিক ৩৯ পয়েন্ট বা দশমিক ৪৭ শতাংশ।
তবে ইসলামী শরিয়াহ ভিত্তিতে পরিচালিত কোম্পানি নিয়ে গঠিত ডিএসই শরিয়াহ সূচক গত সপ্তাহে কমেছে। সপ্তাহজুড়ে সূচকটি কমেছে ৩ দশমিক ৭৫ পয়েন্ট বা দশমিক ২৭ শতাংশ। আগের সপ্তাহে সূচকটি বাড়ে ৪ দশমিক ৬৩ পয়েন্ট বা দশমিক ৩৪ শতাংশ।
সপ্তাহের প্রতি কার্যদিবসে ডিএসইতে গড়ে লেনদেন হয়েছে ৭৩৫ কোটি ৯৩ লাখ টাকা। আগের সপ্তাহে প্রতিদিন গড়ে লেনদেন হয় ৭৯১ কোটি ৪৭ লাখ টাকা। অর্থাৎ প্রতি কার্যদিবসে গড় লেনদেন কমেছে ৫৫ কোটি ৫৪ লাখ টাকা বা ৭ দশমিক শূন্য ২ শতাংশ।
আর সপ্তাহজুড়ে ডিএসইতে মোট লেনদেন হয়েছে ৩ হাজার ৬৭৯ কোটি ৬৮ লাখ টাকা। আগের সপ্তাহে মোট লেনদেন হয় ৩ হাজার ৯৫৭ কোটি ৩৫ লাখ টাকা। সে হিসেবে মোট লেনদেন কমেছে ২৭৭ কোটি ৬৭ লাখ টাকা বা ৭ দশমিক শূন্য ২ শতাংশ।
সপ্তাহজুড়ে ডিএসইতে টাকার অঙ্কে সব থেকে বেশি লেনদেন হয়েছে বাংলাদেশ শিপিং করপোরেশনের শেয়ার। সপ্তাহজুড়ে কোম্পানিটির শেয়ার লেনদেন হয়েছে ১৭৮ কোটি ৫৯ লাখ ২৫ হাজার টাকা, যা মোট লেনদেনের ৪ দশমিক ৮৫ শতাংশ। দ্বিতীয় স্থানে থাকা জেমিনি সি ফুডের শেয়ার লেনদেন হয়েছে ১২৯ কোটি ৫০ হাজার টাকা। ১২৬ কোটি ২৯ লাখ ৮৪ হাজার টাকা লেনদেনের মাধ্যমে তৃতীয় স্থানে রয়েছে ইন্ট্রাকো রিফুয়েলিং স্টেশন।
এছাড়া লেনদেনের শীর্ষ দশ প্রতিষ্ঠানের তালিকায় রয়েছে সি পার্ল বিচ রিসোর্ট, রূপালী লাইফ ইন্স্যুরেন্স, ইস্টার্ন হাউজিং, পেপার প্রসেসিং, অগ্নি সিস্টেম, আমরা নেটওয়ার্ক এবং ইউনিক হোটেল।
সূত্র : জাগোনিউজ২৪.কম