• বৃহস্পতিবার, ০৫ ডিসেম্বর ২০২৪, ০১:৪১ পূর্বাহ্ন
শিরোনাম:
বেনজীর আহমেদের ক্যাশিয়ার জসীম গ্রেফতার এটা কোন ধরনের প্রতিবেশীসুলভ আচরণ, ভারতের আচরণ প্রসঙ্গে মির্জা ফখরুল ভারতকে বাংলাদেশের জনগণের কাছে ক্ষমা চাইতে হবে: খেলাফত মজলিস বাংলাদেশের সহকারী হাইকমিশনে হামলার প্রতিবাদে বিএনপির বিক্ষোভ সীমান্তে যে কোনো অপতৎপরতা রোধে প্রস্তুত বিজিবি ভারতকেই শান্তিরক্ষা বাহিনীর সহায়তা নেওয়ার কথা বললেন উপদেষ্টা আসিফ চিন্ময়ের পক্ষে ছিলেন না আইনজীবী, জামিন শুনানি পেছালো দুর্নীতির শীর্ষে পাসপোর্ট-বিআরটিএ-আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী সংস্থা : টিআইবি সংস্কার নিয়ে কারও চিন্তা করার দরকার নেই, সংস্কার আমরা করবো বাতিল হলো বিদ্যুৎ-জ্বালানির বিশেষ বিধান আইন

আধুনিক যুগেও টিকে আছে কুমিল্লার মৃৎশিল্প

24live@21
আপডেটঃ : বুধবার, ১৯ জুলাই, ২০২৩

প্রাচীনকাল থেকে মানুষের নিত্য দিনের সাংসারিক কাজে ব্যবহার হতো মাটির তৈরি পণ্য। আধুনিকতার ছোঁয়ায় ধীরে ধীরে হারাতে বসেছে মাটির তৈরি পণ্যের ব্যবহার। মাটির তৈরি জিনিসপত্র ব্যাবহারের চেয়ে আধুনিক জিনিসপত্রের ব্যাবহার সহজলভ্য হওয়ায় মাটির তৈরি পণ্যের ব্যবহার ভুলে মানুষ প্লাষ্টিক ও মেলামাইনসহ বিভিন্ন ধাতব দ্বারা তৈরি পণ্য ব্যাবহারে ঝুঁকে পরেছেন। তবে আধুনিক যুগে থেকেও কিছু সংখ্যক মানুষ এখনো মাটির তৈরি জিনিসপত্রের ব্যবহার ভুলে যাননি।
এখনো গ্রামাঞ্চলের বৃদ্ধ মানুষ মাটির তৈরি জিনিস ব্যবহার করতে পছন্দ করেন। মাটির তৈরি জিনিসের তেমন কদর না থাকলেও মৃৎশিল্পের ঐতিহ্য ও বংশ পরমপরা ধরে রেখেছেন।

কুমিল্লা সদর দক্ষিণ উপজেলার গাঙকুল গ্রামের বিকাশ পালের স্ত্রী মৃৎশিল্পী রত্না রানী পাল (৪২)। তিনি বংশ পরম্পরায় এ পেশায় আছেন। তিনি বাসসকে বলেন, বাপ-দাদার পেশা ছাড়তেও পারছি না। যা পাই তা দিয়ে চলছে সংসার। রত্না রানী পাল বলেন, তার স্বামী বিকাশ পালও এক সময় পেশায় কুমার ছিলেন। এ পেশায় রোজগার কম, তাই বছর পাঁচেক আগে বাপ-দাদার পেশা ছেড়ে তিনি ভ্যানগাড়ি চালাতে শুরু করেন। সময় পেলেই স্ত্রীকে কাজে সহায়তা করেন।

সরেজমিনে গাঙকুল গ্রামে গিয়ে জানা গেছে, প্রাচীনকাল থেকে সদর দক্ষিণ উপজেলার বিজয়পুর অঞ্চল মুৎশিল্পের জন্য বিখ্যাত। এখানকার তৈরি রকমারী মৃৎপণ্যের চাহিদা দেশ ছাড়িয়ে বিদেশেও। সেই বিজয়পুর অঞ্চলের গাঙকুল গ্রামে অনেক মৃৎশিল্পীর বসবাস। তাদেরই একজন রত্না রানী পাল। একই পেশার অন্যদের মতো বংশ পরস্পরায় তিনিও কুমারের কাজ করেন। কথা হয় তার সঙ্গে, বললেন, সারা মাস তিনি কাদামাটি নিয়ে খেলা করেন, তৈরি করেন মাটির পাত্র। তার পূর্বপুরুষেরা মাটির হাঁড়ি-পাতিল তৈরি করতেন। তবে তারা কত জনম আগে থেকে এ পেশায় এসেছেন তা তিনি জানেন না। ছোটবেলায় তিনি শুধু দেখেছেন, তা বাবা সুভাস পাল ও দাদা হীরক পাল এ পেশায় ছিলেন। তিনি বলেন, কীভাবে মাটির জিনিসপত্র বানাতে হয় তাদের কাছেই শিখেছি। মাটির কাজ ছাড়া আর কোনো কাজ জানি না। তাই বাপ-দাদার কাজেই লেগে আছি। এখন মাটির হাঁড়ি বানিয়ে বিক্রি করলেও তেমন আয় নেই। রত্না বলেন, তিনি একাই সারা মাসে ১ হাজার মাটির হাঁড়ি বানাতে পারেন। প্রতিদিন ৩৫ থেকে ৪০টি মাটির হাঁড়ি বানিয়ে রাখেন। মাসে একবার বাড়ির উঠানে একসঙ্গে প্রায় ১ হাজার হাঁড়ি পোড়ানো হয়। এতে খরচ বাদে লাভ কেমন হয় জানতে চাইলে তিনি বলেন, এক ট্রাক্টর মাটির দাম ২ হাজার টাকা, কাঁচা হাঁড়ি পোড়ানোর জন্য তিন বস্তা খড় কিনতে খরচ হয় ১ হাজার ৮০০ টাকা, লাকড়ি ৬০০ টাকা, গোবরের লাঠি (জ্বালানি) ৮০০ টাকা, প্রলেপের জন্য কাদামাটি কিনতে লাগে ৩০০ টাকা। এ ছাড়া যেদিন পোড়ানো হবে সেদিন একজন লোক লাগে, তাকে ৫০০ টাকা মজুরি দিতে হয়। সব মিলিয়ে খরচ হয় ৬ হাজার টাকা। এতে এক কেজি দইয়ের একটি হাঁড়ির পাইকারি মূল্য দাঁড়ায় ৯ টাকা। এভাবে এক মাসে ১ হাঁড়ি বানিয়ে ৯ হাজার টাকা পান তিনি।

রত্না রানী পাল বলেন, আগে মাটি দিয়ে ১০-১৫ ধরনের পণ্য তৈরি করে স্থানীয় বাজারে বিক্রি করতেন। এছাড়া সেসব পণ্য পাইকারী হিসেবেও অনেক পাইকাররা বাড়িতে এসে কিনে নিয়ে বাজারে খুচড়া দামে বিক্রি করতেন। তবে বর্তমানে শুধু দইয়ের পাতিল বানাচ্ছেন তারা।

সূত্র :বাসস


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই ক্যাটাগরির আরো নিউজ