জেলায় পরিবেশ বান্ধব সোনালী আঁশ পাট চাষ বৃদ্ধি পাচ্ছে। পাটের নিত্যনতুন ব্যবহার। পাট দিয়ে বিভিন্ন জিনিসপত্র তৈরির ফলে পাটের চাহিদা দিন-দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। মেহেরপুরের উর্বর মাটি পাট চাষের জন্য উপযোগী। এ কারণেই জেলায় ‘সোনালি আঁশ’ খ্যাত পাটের আবাদ প্রতিবছর বাড়ছে। জেলার তিন উপজেলায় কৃষকরা পাট চাষ করে লাভবান হচ্ছেন। বাজারে পাটের ভালো দামও পাচ্ছেন।
সরকারের পাটজাতদ্রব্য ব্যবহার বাধ্যতামূলক করা, পাটের মূল্যবৃদ্ধি, জালানি হিসেবে পাটকাঠির ব্যবহার এবং পাট চাষে মাটির উর্বরতা বৃদ্ধি পাওয়ায় জেলার কৃষকরা পাট চাষ করছেন। চলতি বছরে ২২ হাজার হেক্টর জমিতে পাটচাষ হয়েছে।
জেলা কৃষি বিভাগ থেকে জানা যায়, মেহেরপুরের মাটি ও আবহাওয়া পাট চাষের জন্য উপযোগী। পাটের দাম না পাওয়ার কারণে পাটচাষ তলানীতে নেমে এসেছিল। ফের দামের চাহিদা বাড়াতে তিন বছর থেকে জেলায় পাটের উৎপাদন বেড়েছে। এপ্রিলে পাটের আবাদ করা হয় এবং তা কাটা হয় জুলাই-আগস্ট মাসে।
কৃষকেরা জানান, চৈত্র-বৈশাখ মাসে পাটের বীজ বোনা হয়। আষাঢ়-শ্রাবণ মাসে বষার সময় পাট কাটা হয়। পরে জাগ দেওয়া হয়। পাটের আঁশ বিক্রি করে তাঁদের বেশি লাভ হয়। তবে পাটখড়িও গত কয়েক বছর ধরে ভালো দামে বিক্রি হচ্ছে। পাটের সব অংশই মুল্যবান।
সদর উপজেলার কোলা গ্রামের পাটচাষি রাকিবুল ইসলাম জানান, তিনি গত বছর তিন একর জমিতে পাট চাষ করে ৫০ হাজার টাকার বিক্রি করেন। এক বিঘা জমিতে পাট চাষ করতে খরচ হয় ৭-৮ হাজার টাকা। এছাড়াও তিনি ১৫ হাজার টাকার পাটকাঠি বিক্রি করেছেন। পাট চাষে বেশি লাভবান হওয়ায় এলাকার কৃষকেরা আউশ ধানের বদলে পাট চাষে ঝুকছেন।
পিরোজপুর গ্রামের পাটচাষী জুয়েল আহমেদ জানান- এক বিঘা জমিতে পাট চাষ করতে খরচ হয় ৭-৮ হাজার টাকা। পাট বিক্রি করা যায় ১৫-২০ হাজার টাকার। খরচ বাদে লাভ হয় ৮-১০ হাজার টাকা। অথচ একই পরিমাণ জমিতে ধান রোপণ করলে পাওয়া যেত ১৫-১৬ হাজার টাকা। পাটের বাজারদর ভালো।
কয়েকজন পাটচাষির সঙ্গে আলাপ করে জানা গেছে, পাটের বীজ সরকারিভাবে কৃষকদের কৃষি বিভাগ থেকে বিনামূল্যে দেয়া হয়। কৃষি বিভাগের কর্মকর্তারা মাঠে মাঠে এসে কৃষকদের পরামর্শ দিয়ে থাকেন।। কোনো অসুবিধা হলে ফোন দিলেই কৃষি বিভাগের কর্মকর্তারা এসে পরামর্শ দিয়ে যান।
জেলা কৃষি বিভাগ সূত্র জানায়, গত ৩ বছরের হিসাব পর্যালোচনা করলে দেখা যায়, ২০২১-২২ অর্থবছরে পাট চাষের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ২১ হাজার ৯৬২ হেক্টর জমিতে। চাষাবাদ হয় ২১ হাজার ৫৮০ হেক্টর জমিতে। চলতি ২০২২-২৩
অর্থবছরে পাট চাষের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ২২ হাজার হেক্টর জমিতে। কিন্তু চাষ হয়েছে ২২ হাজার ৪শ হেক্টও জমিতে।
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক শঙ্কর কুমার মজুমদার জানান- জেলায় প্রতিবছর পাট চাষ বাড়ছে।
আবহাওয়া ও মাটি পাট চাষের জন্য এ জেলা উপযোগী। পাট চাযে লাভবান বেশি হওয়ায় কৃষি বিভাগ থেকে কৃষকদের পরামর্শ দেয়া হয়ে তাকে
সূত্র :বাসস