সনাতন ধর্মাবলম্বীদের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব শারদীয় দুর্গাপূজা। জেলার ৬০৬টি ম-পে চলছে দুর্গাপূজার শেষ মুহূর্তের প্রস্তুতি।ব্যস্ততায় যেন দম ফেলার ফুরসত নেই প্রতিমা শিল্পীদের।তাদের নিপুঁণ হাতে তৈরি হচ্ছে দুর্গা, গণেশ ও কার্তিকসহ বিভিন্ন দেব-দেবীর প্রতিমা।
আগামী ২০ অক্টোবর মহাষষ্ঠীর মধ্যে দিয়ে শারদীয় দুর্গোৎসব শুরু হবে।
এ বছর সাতক্ষীরা জেলায় দূর্গাপূজা সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ পরিবেশে সম্পন্ন করার জন্য প্রতিটি মন্ডপকে বাধ্যতামূলক সিসি ক্যামেরার আওতায় আনার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়েছে। তাছাড়া সরকার নির্দেশিত সকল বিধিনিষেধ মেনে এবারের দুর্গাপূজা অনুষ্ঠিত হবে বলে জেলা পূজা উদযাপন পরিষদের পক্ষ থেকে এ তথ্য জানানো হয়েছে।এবছর দুর্গোৎসবে যে কোন অনাকাঙ্খিত ঘটনা এড়াতে পুলিশের পাশাপাশি বিভিন্ন আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর সমন্বয়ে তিনস্তর বিশিষ্ট নিরাপত্তা জোরদার করা হবে।
সাতক্ষীরা জেলা পূজা উদযাপন পরিষদ সূত্রে জানা যায়, এ বছর জেলার ৭টি উপজেলায় ৬০৬টি পূজাম-পে দুর্গাপূজা অনুষ্ঠিত হবে।তারমধ্যে সাতক্ষীরা সদর ১১২টি,কলারোয়া উপজেলার ৪৮টি,তালা ১৯৬টি, আশাশুনি ১০৮টি,দেবহাটা ২১টি,কালিগঞ্জ ৫১টি ও শ্যামনগরের ৭০টি পূজাম-পে দুর্গাপূজা অনুষ্ঠিত হবে।
গত শনিবার শুভ মহালয়া মধ্যে দিয়ে শুরু হয় এবারের শারদীয় দুর্গোৎসব।
দুর্গোৎসব ঘিরে নানা আয়োজনে ব্যস্ত হিন্দু সম্প্রদায়ের মানুষ। আলোকসজ্জা ও রঙিন কাগজ দিয়ে সাজানো হচ্ছে প্রতিটি ম-প।প্রতিমা দেখতে এখনই দর্শনার্থীরা ম-পে ম-পে ঘুরে বেড়াচ্ছে।
আগামী ১৯ অক্টোবর মহাপঞ্চমীতে সায়ংকালে দেবীর বোধনের মধ্য দিয়ে শুরু হবে হিন্দু সম্প্রদায়ের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব।২০ অক্টোবর শুক্রবার মহাষষ্ঠীতে দুর্গাদেবীর ষষ্ঠাদি কল্পারম্ভ ও ষষ্ঠী বিহিত পূজা এবং সায়ংকালে দেবীর বোধন, আমন্ত্রণ ও অধিবাস। ২১ অক্টোবর মহাসপ্তমীতে নবপ্রত্রিকা প্রবেশ,সপ্তমী বিহিত পূজা এবং দেবীর ঘোটকে আগমন।২২ অক্টোবর মহাষ্ঠমীতে দুর্গা দেবীর অষ্টমী বিহিত পূজা।২৩ অক্টোবর মহানবমীতে বিহিত পূজা এবং ২৪ অক্টোবর মঙ্গলবার বিজয়া দশমীতে বিহিত পূজা সমাপন ও বিসর্জন,বিজয়া দশমী কৃত্য ও দেবীর ঘটকে গমন।
এদিকে, ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে সকল জনসাধারণের সহযোগিতায় শারদীয় দুর্গাপূজা সুষ্ঠু ও সুন্দরভাবে অনুষ্ঠিত হবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন জেলাবাসী।
সাতক্ষীর জেলা মন্দির কমিটির সভাপতি বিশ্বনাথ ঘোষ বলেন,শান্তিপূর্ণভাবে পূজা উদযাপনের লক্ষ্যে তাদের সব প্রস্তুতি শেষের দিকে। জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে সম্প্রতি আসন্ন দুর্গাপূজা নিয়ে জেলা প্রশাসক ও জেলা পুলিশে সাথে আলোচনা সভা শেষ হয়েছে। তবে এবার আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ও পূজা উদযাপন পরিষদের পক্ষ থেকে যে মনিটরিং সেল খোলা হয়েছে। তারা আন্তরিকভাবে কাজ করলে কোন ধরনের অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটবে না। প্রশাসনের পাশাপাশি প্রতিটি ম-পের নিজস্ব সেচ্ছাসেবক দায়িত্ব পালন করবে। জেলার অতিগুরুত্বপূর্ণ মন্দিরগুলোর তালিকা করে সেখানে বাড়তি নিরাপত্তার ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে বলে তিনি জানান।
সাতক্ষীরা জেলা পূজা উদযাপন কমিটির সভাপতি সুভাস ঘোষ বলেন, এবছর জেলায় ৬০৬ টি ম-পে উদযাপিত হবে দুর্গোৎসব।
সাতক্ষীরার পুলিশ সুপার কাজী মনিরুজ্জামান বলেন, আসন্ন শারদীয় দুর্গাপূজা উপলক্ষে জেলা পুলিশ সকল ধরনের প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছি। যেকোন ধরণের অপ্রীতিকর ঘটনা প্রতিরোধে আমরা সর্বদা সজাগ রয়েছি।সকল সনাতন ধর্মাবলম্বী মানুষ যাতে নির্বিঘেœ তাদের উৎসব পালন করতে পারে সে বিষয়ে সকল প্রকার প্রস্তুতি সম্পন্ন করা হয়েছে। এছাড়া দেশের সার্বিক পরিস্থিতি বিবেচনা করে র্যা ব ও গোয়েন্দা সংস্থার লোকজন ও সার্বক্ষণিক নিরাপত্তায় দ্বায়িত্বে নিয়োজিত থাকবে। তাছাড়া এবছর নিরাপত্তার স্বার্থে প্রতিটা পূজামন্ডপ এলাকা সিসিটিভির আওতায় থাকবে।
সাতক্ষীরা জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ হুমায়ুন কবির বলেন, হিন্দু ধর্মালম্বীদের সব থেকে বড় ধর্মীয় উৎসব দুর্গাপূজা।দূর্গাপূজা সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ পরিবেশে সম্পন্ন করার ও যে কোন অনাকাঙ্খিত ঘটনা এড়াতে পুলিশের পাশাপাশি বিভিন্ন আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর সমন্বয়ে তিনস্তর বিশিষ্ট নিরাপত্তা জোরদার করা হবে।
সূত্র :বাসস