আজ শুক্রবার থেকে জেলার ১ হাজার ৩০১টি মন্ডপে ষষ্ঠীপূজার মধ্যদিয়ে শুরু হয়েছে বাঙালি হিন্দু সম্প্রদায়ের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব শারদীয় দুর্গাপূজা।
এরমধ্য দিয়ে বিপুল উৎসাহ উদ্দীপনা ও ধর্মীয় ভাবগাম্ভীর্যের মধ্য দিয়ে উৎসব মুখর পরিবেশে এ জেলায় শারদীয় দুর্গোৎসব উদযাপিত হচ্ছে ।
বিশুদ্ধ সিদ্ধান্ত পঞ্জিকা মতে ২৪ অক্টোবর বিজয়া দশমীতে প্রতিমা বিসর্জনের মধ্যদিয়ে শেষ হবে ৫ দিনব্যাপী এ উৎসব।
আজ শুক্রবার সকাল ৬ টা ১০মিনিটে সায়াংকালে কল্পারম্ভ এবং বোধণ আমন্ত্রণ ও অধিবাসের মধ্যদিয়ে উৎসবের প্রথম দিন ষষ্ঠীপূজা সম্পন্ন হয়েছে। চন্ডিপাঠ, ঢাক-ঢোল কাঁসা এবং শঙ্খের ধ্বনিতে মুখরিত হয়ে উঠেছে মন্ডপগুলো। প্রথম দিনেই দেবীর প্রতি ভক্তিপূর্ণ অর্ঘ নিবেদন করা হয়েছে। দেবী বন্দনায় সকালেই মন্ডপগুলো মুখরিত হয়ে ওঠে।
গোপালগঞ্জ জেলা পূজা উদযাপন পরিষদের সভাপতি ডা. অসিত কুমার মল্রিক বলেন, জেলার ৫ উপজেলায় এবছর ১ হাজার ৩০১টি মন্ডপে শারদীয় দুর্গোৎসবের আয়োজন করা হয়েছে।
প্রতিমার সাজসজ্জা, মন্ডপ অলংকরণ, আলোকসজ্জাসহ প্রায় সব প্রস্তুতি বৃহস্পতিবার রাতেই সম্পন্ন হয়েছে। প্রতিটি মন্ডপে উৎসবের আবহ সৃষ্টি হয়েছে।দেবীর বোধন, আমন্ত্রণ ও ৬ষ্ঠীপূজা সম্পন্ন হয়েছে।
আজ শুক্রবার সকালে ৬ষ্ঠীপূজার মধ্যে দিয়ে ৫ দিনের দুর্গোৎসব শুরু হয়েছে।
পূজায় দেশ, জাতি ও বিশ্ববাসীর কল্যাণ, সমৃদ্ধি এবং সুখ,শান্তির জন্য প্রার্থনা করা হবে।
গোপালগঞ্জের পুরোহিত দিপংকর চক্রবর্ত্তী বলেন, দেবী দুর্গার আগমনে বিশ্বের কল্যাণ সাধিত হবে। দেবীদুর্গা এবার ঘটকে(ঘোড়ায়) চড়ে কৈলাশ থেকে মর্ত্যালোকে (পৃথিবী) আসছেন। তার আগমনে প্রাকৃতিক বিপর্যয় রোগ-শোক হানাহানি ও মহামারি বৃদ্ধি পাবে। অন্যদিকে কৈলাশে(স্বর্গে) যাবেন ঘোড়ায় চড়ে। ধরাধাম(পৃথিবী)যার ফলে জগতে মড়ক ব্যাধি এবং প্রাণহানীর মতো ঘটনা বাড়বে ।
শহরের পুরাতন বাজার পূজামন্ডপ কমিটির সভাপতি দিলীপ কুমার সাহা বলেন, মন্ডপে পূজার পাশাপাশি ভক্তিমূলক সঙ্গীতানুষ্ঠান, বস্ত্র বিতরণ, মহাপ্রসাদ বিতরণ, আরতি প্রতিযোগিতার আয়োজন রয়েছে। সরকারি নিদের্শনা মেনে পূজা অর্চণা অনুষ্ঠিত হচ্ছে। মন্ডপে সুরক্ষা দেওয়ার জন্য আমরা এ বছর স্বেচ্ছাসেবক নিয়োগ করছি। তারা রাতে পাহারা দেবে।
কোটালীপাড়া উপজেলা সদরের সহস্র বছরের ঐতিহ্যবাহী সিদ্ধান্ত বাড়ি পূজামন্ডপ কমিটির সভাপতি গৌরাঙ্গ লাল দাস বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে ২০০৯ সালে আওয়ামী লীগ সরকার গঠন করে। প্রধানমন্ত্রী পূজায় অর্থিক সহায়তা প্রদানের পাশাপাশি নিরাপত্তা নিশ্চিত করেছেন। শান্তিপূর্ণসহ অবস্থানের পরিবেশ সৃষ্টি করে দিয়েছেন।এ কারণে প্রতিবছর গোপালগঞ্জ জেলায় পূজার সংখ্যা বৃদ্ধি পাচ্ছে। আমাদের মন্ডপে দেশ, জাতি ও বিশ্বের সব মানুষের কল্যাণ কামনায় প্রার্থণা করা হবে। সেই সাথে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার জন্য প্রতিদিনই প্রার্থণার আয়োজন থাকবে।
কোটালীপাড়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ভবেন্দ্র নাথ বিশ্বাস বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার অনুদানের ৩ লাখ ২৫ হাজার টাকা মন্ডপে-মন্ডপে পৌছে দেয়া হয়েছে। পূজার ৫ দিনই প্রধানমন্ত্রীর জন্য মন্ডপগুলোতে বিশেষ প্রার্থণা করা হবে।
টুঙ্গিপাড়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মো. বাবুল শেখ বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা টুঙ্গিপাড়া উপজেলার পূজামন্ডপে ব্যক্তিগত তহবিল থেকে ৯৪ হাজার টাকা অনুদান দিয়েছেনে। এই উপজেলায় সর্বোচ্চ নিরাপত্তা মধ্যে দিয়ে উৎসব মুখর পরিবেশে শারদীয় দুর্গোৎসব অনুষ্ঠিত হবে। পূজার ৫ দিনই প্রতিটি মন্ডপে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সুস্বাস্থ্য, সাফল্য ও দীর্ঘায়ূ কামণায় প্রার্থণা করা হবে।
সূত্র : বাসস