• সোমবার, ০২ ডিসেম্বর ২০২৪, ১২:৩৫ অপরাহ্ন
শিরোনাম:
সংস্কার নিয়ে কারও চিন্তা করার দরকার নেই, সংস্কার আমরা করবো বাতিল হলো বিদ্যুৎ-জ্বালানির বিশেষ বিধান আইন মেডিকেলে ভর্তিতে ‘অটোমেশন’ বাতিলের দাবিতে মানববন্ধন খালেদা জিয়ার সঙ্গে তারেকের পররাষ্ট্রবিষয়ক উপদেষ্টার সাক্ষাৎ ‘চিত্রকর্মগুলো তরুণ প্রজন্মের সৃজনশীলতার এক উজ্জ্বল উদাহরণ’ জেনেভায় আসিফ নজরুলকে হেনস্তা, মিশনের শ্রম কাউন্সেলরকে ‘স্ট্যান্ড রিলিজ’ মা নেই, কারাগারে বাবা : শিশুদের দেখভাল করতে হাইকোর্টের নির্দেশ সংস্কারের গতি ঠিক করবে নির্বাচন কত দ্রুত হবে : এএফপিকে প্রধান উপদেষ্টা সাগর-রুনি হত্যার ৩২০১ পৃষ্ঠার নথি পেয়েছে পিবিআই সম্প্রীতি বজায় রাখতে সেনাবাহিনী সদা প্রস্তুত: সেনাপ্রধান

৭২ ঘণ্টার অবরোধে স্থবির খাগড়াছড়ি ও রাঙামাটির জনজীবন

Md Islam
আপডেটঃ : রবিবার, ২২ সেপ্টেম্বর, ২০২৪

পার্বত্য জেলা খাগড়াছড়ির পর রাঙামাটি থেকে ১৪৪ ধারা তুলে নেওয়া হলেও অবরোধের কারণে দুই জেলার জনজীবন এখনো স্বাভাবিক হয়নি। ৭২ ঘণ্টার অবরোধে দ্বিতীয় দিন ছিল আজ রোববার। এ কারণে দুই জেলায় বন্ধ ছিল দূরপাল্লার যানবাহন। খোলেনি অধিকাংশ দোকানপাট। খাগড়াছড়ি শহরের বেশ কিছু স্থানে অটোরিকশা চলাচল করলেও রাঙামাটি শহরের অভ্যন্তরেও কোনো যানবাহন চলছে না।

পাহাড়ের ঘটনার প্রতিবাদে গত শুক্রবার চট্টগ্রাম নগরের চেরাগী পাহাড় মোড় ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে অনুষ্ঠিত প্রতিবাদ কর্মসূচি থেকে ‘বিক্ষুব্ধ জুম্ম ছাত্র-জনতার’ ব্যানারে ৭২ ঘণ্টার এ অবরোধের ডাক দেওয়া হয়। কর্মসূচিতে সমর্থন দিয়েছে সংঘাত ও বৈষম্যবিরোধী পাহাড়ি ছাত্র আন্দোলন নামের সংগঠন। এ ছাড়া পার্বত্য এলাকার আঞ্চলিক দল ইউনাইটেড পিপলস ডেমোক্রেটিক ফ্রন্টও (ইউপিডিএফ) অবরোধে সমর্থন দেয়। গতকাল শনিবার সকাল ৬টা থেকে সড়ক ও নৌপথ অবরোধ চলছে।

অবরোধের দ্বিতীয় দিনে খাগড়াছড়ি থেকে দূরপাল্লার কোনো যানবাহন ছেড়ে যায়নি। তবে খাগড়াছড়ি শহরের শাপলা চত্বর, আদালত সড়ক, বাস টার্মিনাল, চেঙ্গি স্কোয়ার, মধুপুর সড়কসহ আশপাশের ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা চলাচল স্বাভাবিক রয়েছে।
খাগড়াছড়ি পার্বত্য জেলা বাস-মিনিবাস শ্রমিক ইউনিয়নের নির্বাহী সদস্য মো. আবদুল মোমিন বলেন, পরিবহনশ্রমিক, সাধারণ যাত্রীদের জীবনের নিরাপত্তার কথা চিন্তা করে যানবাহন চলাচল বন্ধ রাখা হয়েছে।

পার্বত্য যানবাহন মালিক সমিতির সভাপতি নির্নিমেষ দেওয়ান বলেন, তাঁদের কোনো গাড়ি চলাচল করছে না। এতে গাড়ির সঙ্গে সংযুক্ত অনেক কর্মচারী বেকার হয়ে পড়েছেন।

খাগড়াছড়ি পুলিশ সুপার আরেফিন জুয়েল বলেন, অবরোধের কারণে জেলায় কোনো ধরনের সহিংসতা ঘটেনি। শহরে দোকানপাট এবং গাড়ি চলাচল স্বাভাবিক। প্রতিটি গুরুত্বপূর্ণ স্থানে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা টহলে রয়েছে।
তবে গুলিবিদ্ধ হয়ে হতাহতের ঘটনায় এখনো কোনো মামলা হয়নি বলে জানান খাগড়াছড়ি সদর থানার ভারপ্রাপ্ত (ওসি) কর্মকর্তা মো. আবদুল বাতেন মৃধা।

রাঙামাটিতে চলছে না অটোরিকশাও

পাহাড়ি-বাঙালি সংঘাতকে কেন্দ্র করে রাঙামাটিতে পরিবহন ধর্মঘট ও অবরোধের কারণে সাধারণ মানুষের যাতায়াতের চরম ভোগান্তি সৃষ্টি হয়েছে। আজ সকাল থেকে রাঙামাটি শহরে জরুরি প্রয়োজন ছাড়া তেমন মানুষ বের হননি। যাদের জরুরি প্রয়োজন তাঁরা হেঁটে কাজ ছেড়ে বাড়িতে ফিরছেন। সকাল থেকে শহরে কোনো যানবাহন চলাচল করেনি। রাঙামাটি শহরে একমাত্র যোগাযোগমাধ্যম অটোরিকশাও চলাচল করতে দেখা যায়নি।

এ ছাড়া রাঙামাটি-চট্টগ্রাম, রাঙামাটি-খাগড়াছড়ি, রাঙামাটি-কাপ্তাই-বান্দরবান রুটেও দূরপাল্লার কোনো যানবাহন চলাচল করেনি। যান চলাচল বন্ধ থাকায় সাধারণ যাত্রীরা চরম দুর্ভোগে পড়েছেন।

অবরোধের পাশাপাশি রাঙামাটিতে গতকাল থেকে অনির্দিষ্টকালের জন্য পরিবহন ধর্মঘটও ডাক দেওয়া হয়েছে। শুক্রবার যানবাহন ভাঙচুরের প্রতিবাদে পরিবহন ধর্মঘট ডাকা হয়। জানতে চাইলে পরিবহন শ্রমিক ইউনিয়নের সভাপতি রুহুল আমিন বলেন, দ্বিতীয় দিনের মতো সব ধরনের যানবাহন চলাচল বন্ধ রয়েছে।

রাঙামাটি ও খাগড়াছড়ির উদ্দেশ্যে চট্টগ্রাম থেকেও কোনো যানবাহন আজ ছেড়ে যায়নি। নগরের অক্সিজেন এলাকায় অবস্থিত বাস কাউন্টারগুলো থেকে কোনো টিকিট বিক্রি হয়নি।

এদিকে আজ বেলা ১১টার দিকে ১৪৪ ধারা তুলে নেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ মোশারফ হোসেন খান। তবে এখনো শহরের পরিস্থিতি পুরোপুরি স্বাভাবিক হয়নি।

আজ সকাল সাড়ে ১০টার দিকে জেলা প্রশাসনের উদ্যোগে ক্ষতিগ্রস্ত এলাকায় পরিদর্শন করা হচ্ছে। এ সময় রাঙামাটির রিজিয়ন কমান্ডার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. শওকত ওসমান, জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ মোশারফ হোসেন খান, পুলিশ সুপার এস এম ফরহাদ হোসেন ও কোতোয়ালি থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ আলী উপস্থিত ছিলেন।

উল্লেখ্য, গত বুধবার খাগড়াছড়ি সদরে মোটরসাইকেল চুরিকে কেন্দ্রে করে গণপিটুনিতে মো. মামুন (৩০) নামের এক বাঙালি যুবকের মৃত্যুর পর সংঘর্ষ শুরু হয়। ওই দিন সেখানকার পাহাড়ি ও বাঙালির মধ্যে পাল্টাপাল্টি ধাওয়ার ঘটনা ঘটে।

পরদিন বৃহস্পতিবার বিকেলে হত্যার প্রতিবাদে দীঘিনালায় বাঙালিরা বিক্ষোভ মিছিল বের করেন। বাঙালিদের অভিযোগ, মিছিলটি বোয়ালখালী বাজার অতিক্রম করার সময় পাহাড়িরা বাধা দিলে দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ বাধে। স্থানীয় সূত্রগুলো জানায়, সংঘর্ষের একপর্যায়ে দীঘিনালার লারমা স্কয়ারে বিভিন্ন দোকান ও বাড়িঘরে আগুন দেওয়া হয়।

দীঘিনালা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মামুনুর রশীদ বলেন, আগুনে দীঘিনালা বাসস্টেশন ও লারমা স্কয়ার এলাকায় ১০২টি দোকান আগুনে পুড়ে গেছে। এর মধ্যে পাহাড়িদের ৭৮টি ও বাঙালির সম্প্রদায়ের ২৪টি দোকান রয়েছে।

দীঘিনালা উপজেলায় সংঘর্ষের জেরে খাগড়াছড়ি জেলা সদর, পানছড়ি ও আশপাশের এলাকায় উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। বৃহস্পতিবার রাতে খাগড়াছড়ি জেলা সদরে গোলাগুলির ঘটনা ঘটে। সংঘর্ষ ও গুলির ঘটনায় ৩ জন নিহত হন। আহত হন অন্তত ২০ জন। নিহত ব্যক্তিরা হলেন জুনান চাকমা (২০), ধনঞ্জয় চাকমা (৫০) ও রুবেল চাকমা (৩০)।

খাগড়াছড়িতে তিন পাহাড়ির মৃত্যু ও অগ্নিসংযোগের ঘটনার প্রতিবাদে শুক্রবার সকালে রাঙামাটি জেলা সদরে ‘সংঘাত ও বৈষম্যবিরোধী পাহাড়ি ছাত্র আন্দোলন’–এর ব্যানারে প্রতিবাদ মিছিল বের করেন পাহাড়িরা। মিছিলে ঢিল ছোড়াকে কেন্দ্র করে পাহাড়ি ও বাঙালিদের মধ্যে সংঘর্ষ বাধে। এ সময় আঞ্চলিক পরিষদ কার্যালয়সহ ৩০ থেকে ৪০টি বাড়িঘর, দোকানপাটে ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করা হয়েছে। অন্তত ৩০টি যানবাহন পুড়িয়ে দেওয়া হয়। সংঘর্ষে ১ জন নিহত এবং আহত হয়েছেন দুই পক্ষের অন্তত ৬০ জন। নিহত ব্যক্তির নাম অনীক কুমার চাকমা। তিনি কর্ণফুলী ডিগ্রি কলেজের স্নাতকের শিক্ষার্থী। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে শুক্রবার দুপুরে দুই জেলা সদরে ১৪৪ ধারা জারি করা হয়।

দীঘিনালা উপজেলায় সংঘর্ষের জেরে খাগড়াছড়ি জেলা সদর, পানছড়ি ও আশপাশের এলাকায় উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। বৃহস্পতিবার রাতে খাগড়াছড়ি জেলা সদরে গোলাগুলির ঘটনা ঘটে। সংঘর্ষ ও গুলির ঘটনায় ৩ জন নিহত হন। আহত হন অন্তত ২০ জন। নিহত ব্যক্তিরা হলেন জুনান চাকমা (২০), ধনঞ্জয় চাকমা (৫০) ও রুবেল চাকমা (৩০)।

খাগড়াছড়িতে তিন পাহাড়ির মৃত্যু ও অগ্নিসংযোগের ঘটনার প্রতিবাদে শুক্রবার সকালে রাঙামাটি জেলা সদরে ‘সংঘাত ও বৈষম্যবিরোধী পাহাড়ি ছাত্র আন্দোলন’–এর ব্যানারে প্রতিবাদ মিছিল বের করেন পাহাড়িরা। মিছিলে ঢিল ছোড়াকে কেন্দ্র করে পাহাড়ি ও বাঙালিদের মধ্যে সংঘর্ষ বাধে। এ সময় আঞ্চলিক পরিষদ কার্যালয়সহ ৩০ থেকে ৪০টি বাড়িঘর, দোকানপাটে ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করা হয়েছে। অন্তত ৩০টি যানবাহন পুড়িয়ে দেওয়া হয়। সংঘর্ষে ১ জন নিহত এবং আহত হয়েছেন দুই পক্ষের অন্তত ৬০ জন। নিহত ব্যক্তির নাম অনীক কুমার চাকমা। তিনি কর্ণফুলী ডিগ্রি কলেজের স্নাতকের শিক্ষার্থী। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে শুক্রবার দুপুরে দুই জেলা সদরে ১৪৪ ধারা জারি করা হয়।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই ক্যাটাগরির আরো নিউজ