ঈদের পর গত সপ্তাহে শেয়ারবাজারে লেনদেন হওয়া চার কার্যদিবসেই ঊর্ধ্বমুখিতার দেখা মিলেছে। এতে বেড়েছে সবকটি মূল্যসূচক। সেই সঙ্গে দাম বাড়ার তালিকায় নাম লিখিয়েছে বেশি সংখ্যক প্রতিষ্ঠান। পাশাপাশি বেড়েছে লেনদেনের গতি এবং বাজার মূলধন।
ঈদের পর প্রথম সপ্তাহে প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) বাজার মূলধন দুই হাজার কোটি টাকার ওপরে বেড়ে গেছে। প্রধান মূল্যসূচক বেড়েছে দশমিক ৭৩ শতাংশ। আর দৈনিক গড় লেনদেন বেড়েছে ৫২ শতাংশের বেশি।
বাজার মূলধন, সূচক ও লেনদেন বাড়লেও তালিকাভুক্ত অর্ধেকের বেশি প্রতিষ্ঠানের ক্রেতা সংকট ছিল গত সপ্তাহজুড়েই। ফলে দুইশ এর বেশি প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের দাম ফ্লোর প্রাইসে আটকে রয়েছে। ক্রেতা না থাকায় ফ্লোর প্রাইসে আটকে থাকা এসব প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিট বিক্রি করতে পারছেন না বিনিয়োগকারীরা।
গত সপ্তাহের শেষ কার্যদিবসের লেনদেন শেষে ডিএসইর বাজার মূলধন দাঁড়িয়েছে ৭ লাখ ৬৬ হাজার ৫৭ কোটি টাকা। যা তার আগের সপ্তাহের শেষ কার্যদিবসে ছিল ৭ লাখ ৬৩ হাজার ৮৮৮ কোটি টাকা। অর্থাৎ গত সপ্তাহে ডিএসইর বাজার মূলধন বেড়েছে ২ হাজার ১৬৯ কোটি টাকা। বাজার মূলধন বাড়ার অর্থ তালিকাভুক্ত প্রতিষ্ঠানগুলোর শেয়ার ও ইউনিটের দাম সম্মেলিতভাবে ওই পরিমাণ বেড়েছে।
এদিকে গত সপ্তাহজুড়ে ডিএসইতে মোট ৩৮৪টি প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিট লেননেদ হয়েছে। লেনদেনে অংশ নেওয়া এ প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে ১১৩টির শেয়ার ও ইউনিট দাম বাড়ার তালিকায় নাম লিখিয়েছে। বিপরীতে দাম কমেছে ৩৩টির। আর ২৩৮টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে।
এতে ডিএসইর প্রধান মূল্যসূচক ডিএসইএক্স বেড়েছে ৪৫ দশমিক ৪১ পয়েন্ট বা দশমিক ৭৩ শতাংশ। আগের সপ্তাহে সূচকটি বাড়ে ১৩ দশমিক ৪৭ পয়েন্ট বা দশমিক ২২ শতাংশ। এর মাধ্যমে টানা চার সপ্তাহ ডিএসইর প্রধান সূচক বাড়লো।
প্রধান মূল্যসূচকের সঙ্গে বেড়েছে বাছাই করা ভালো কোম্পানি নিয়ে গঠিত ডিএসই-৩০ সূচক। সপ্তাহজুড়ে সূচকটি বেড়েছে ৫ দশমিক ৭২ পয়েন্ট বা দশমিক ২৬ শতাংশ। আগের সপ্তাহে সূচকটি বাড়ে দশমিক ৯২ পয়েন্ট বা দশমিক শূন্য ৪ শতাংশ।
ইসলামী শরিয়াহ ভিত্তিতে পরিচালিত কোম্পানি নিয়ে গঠিত ডিএসই শরিয়াহ্ সূচকও বেড়েছে। সপ্তাহজুড়ে সূচকটি বেড়েছে ১৩ দশমিক ৫০ পয়েন্ট বা ১ শতাংশ। আগের সপ্তাহে সূচকটি বাড়ে ১ দশমিক ৮৯ পয়েন্ট বা দশমিক ১৪ শতাংশ।
সপ্তাহের প্রতি কার্যদিবসে ডিএসইতে গড়ে লেনদেন হয়েছে ৭৪৯ কোটি ৬৭ লাখ টাকা। আগের সপ্তাহে প্রতিদিন গড়ে লেনদেন হয় ৪৯১ কোটি ৬৭ লাখ টাকা। অর্থাৎ প্রতি কার্যদিবসে গড় লেনদেন বেড়েছে ২৫৮ কোটি টাকা বা ৫২ দশমিক ৪৭ শতাংশ।
আর গত সপ্তাহজুড়ে ডিএসইতে মোট লেনদেন হয়েছে ২ হাজার ৯৯৮ কোটি ৭০ লাখ টাকা। আগের সপ্তাহে মোট লেনদেন হয় ১ হাজার ৪৭৫ কোটি ৩ লাখ টাকা। সে হিসেবে মোট লেনদেন বেড়েছে ১ হাজার ৫২৩ কোটি ৬৭ লাখ টাকা বা ১০৩ দশমিক ৩০ শতাংশ। মোট লেনদেন বেশি হারে বাড়ার কারণ ঈদের আগের শেষ সপ্তাহে শেয়ারবাজারে তিন কার্যদিবস লেনদেন হয়।
সপ্তাহজুড়ে ডিএসইতে টাকার অঙ্কে সব থেকে বেশি লেনদেন হয়েছে ইউনিক হোটেলের শেয়ার। সপ্তাহজুড়ে কোম্পানিটির শেয়ার লেনদেন হয়েছে ২০৮ কোটি ৬২ লাখ ৫৬ হাজার টাকা, যা মোট লেনদেনের ৬ দশমিক ৯৬ শতাংশ। দ্বিতীয় স্থানে থাকা ইস্টার্ন হাউজিংয়ের শেয়ার লেনদেন হয়েছে ১৪৮ কোটি ৫১ লাখ ৬২ হাজার টাকা। ১৩৪ কোটি ৩৫ লাখ ১২ হাজার টাকা লেনাদেনের মাধ্যমে তৃতীয় স্থানে রয়েছে জেনেক্স ইনফোসিস।
এছাড়া লেনদেনের শীর্ষ দশ প্রতিষ্ঠানের তালিকায় রয়েছে-সি পার্ল বিচ রিসোর্ট, অলেম্পিক ইন্ডাস্ট্রিজ, অ্যাপেক্স ফুটওয়্যার, আমরা নেটওয়ার্ক, জেমিনি সি ফুড, বাংলাদেশ শিপিং করপোরেশন এবং ওরিয়ন ইনফিউশন।
সূত্র :জাগোনিউজ২৪.কম