• সোমবার, ০২ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৮:৪৯ অপরাহ্ন
শিরোনাম:
সংস্কার নিয়ে কারও চিন্তা করার দরকার নেই, সংস্কার আমরা করবো বাতিল হলো বিদ্যুৎ-জ্বালানির বিশেষ বিধান আইন মেডিকেলে ভর্তিতে ‘অটোমেশন’ বাতিলের দাবিতে মানববন্ধন খালেদা জিয়ার সঙ্গে তারেকের পররাষ্ট্রবিষয়ক উপদেষ্টার সাক্ষাৎ ‘চিত্রকর্মগুলো তরুণ প্রজন্মের সৃজনশীলতার এক উজ্জ্বল উদাহরণ’ জেনেভায় আসিফ নজরুলকে হেনস্তা, মিশনের শ্রম কাউন্সেলরকে ‘স্ট্যান্ড রিলিজ’ মা নেই, কারাগারে বাবা : শিশুদের দেখভাল করতে হাইকোর্টের নির্দেশ সংস্কারের গতি ঠিক করবে নির্বাচন কত দ্রুত হবে : এএফপিকে প্রধান উপদেষ্টা সাগর-রুনি হত্যার ৩২০১ পৃষ্ঠার নথি পেয়েছে পিবিআই সম্প্রীতি বজায় রাখতে সেনাবাহিনী সদা প্রস্তুত: সেনাপ্রধান

গুঁড়িয়ে দেওয়া ইটভাটায় সবুজের সমারোহ

24live@21
আপডেটঃ : মঙ্গলবার, ৭ মার্চ, ২০২৩

এক বছর আগেও ইটভাটার ধোঁয়ায় আচ্ছন্ন ছিল এলাকা। এই ধোঁয়ায় আশপাশের এলাকার গাছপালাও নষ্ট হচ্ছিল। এতে পরিবেশ হারাচ্ছিল ভারসাম্য। এ অবস্থায় পরিবেশ অধিদপ্তর অভিযান চালিয়ে চারটি গ্রামের সাতটি ইটভাটা বন্ধ করে দেয়। এর পর থেকেই পাল্টে গেছে এসব গ্রামের পরিবেশ।

বন্ধ হওয়া ইটভাটার জমিগুলোয় চাষাবাদ করেছেন কৃষকেরা। এলাকায় এখন ছড়িয়ে পড়েছে সবুজের সমারোহ। এই চিত্র গাজীপুরের কালিয়াকৈর উপজেলার শাহবাজপুর, ডুবাইল, সোনাখালী ও দরবাড়িয়া গ্রামের।

সম্প্রতি শাহবাজপুর এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, কৃষকদের কেউ কেউ ধান রোপণ করছেন। কেউ রোপণ করা ধানখেতে পানি দিচ্ছেন। আবার কেউ বীজতলা তৈরি করছেন। অনেকেই সবজি খেতের পরিচর্যায় ব্যস্ত। ওই গ্রামের বাসিন্দা আফজাল হোসেন বলেন, ‘ইটভাটার জন্য জমি ভাড়া দিয়ে বেশি টাকা পেয়েছি, এটা ঠিক। কিন্তু শান্তি পাইনি। ধুলাবালুতে একেবারে খারাপ পরিবেশের মধ্যে ছিলাম। এখন ইটভাটা বন্ধ হয়ে যাওয়ায় আবার চাষাবাদ শুরু করেছি। এলাকার পরিবেশটাও পরিবর্তন হয়েছে।’

উপজেলার চারটি গ্রামের একাধিক বাসিন্দার সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, গাজীপুরের কালিয়াকৈরে বেশির ভাগ তিন ফসলি কৃষিজমি। এসব জমি ভাড়া নিয়েই সেখানকার লোকালয়ে গড়ে উঠেছে প্রায় অর্ধশত ইটভাটা। এর মধ্যে হাতেগোনা কয়েকটি ইটভাটার কাগজপত্র থাকলেও বাকিগুলোর অনুমোদন বা পরিবেশ অধিদপ্তরের ছাড়পত্র নেই। ফলে এসব ইটভাটার কারণে পরিবেশ বিপন্ন হয়ে উঠছে। ইটভাটার আশপাশের মানুষও স্বাস্থ্য ঝুঁকিতে আছেন। এসব অবৈধ ইটভাটা বন্ধে এলাকাবাসী বিভিন্ন সময় বিক্ষোভ মিছিল ও মানববন্ধন করেছেন।

এ অবস্থায় গত বছর উপজেলা প্রশাসন ও পরিবেশ অধিদপ্তর ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করে। ওই অভিযানে শাহবাজপুর, ডুবাইল, সোনাখালী ও দরবাড়িয়া এলাকার অবৈধ সাতটি ইটভাটা গুঁড়িয়ে দেওয়া হয়। এতে এ বছর ওই ৪ গ্রামের প্রায় ৫০০ বিঘা জমি চাষাবাদের আওতায় এসেছে। বর্তমানে এসব জমিতে শর্ষে, ভুট্টা, ধানসহ বিভিন্ন সবজি আবাদ করা হয়েছে।

উপজেলার ডুবাইল গ্রামের বাসিন্দা কৃষক আফাজ উদ্দিন বলেন, ‘আশপাশের সবাই আগে ইটভাটার কাছে জমি ভাড়া দিত। যার কারণে আমাকেও ২০ বিঘা জমি ইটভাটার মালিকদের কাছে ভাড়া দিতে হয়েছে। এ বছর ইটভাটা নেই, তাই সব জমিতে বোরো ধানের আবাদ করেছি। আগে চারপাশ ধুলাবালু ছড়িয়ে থাকত, আর এখন চারদিক সবুজে ভরে গেছে।’

সোনাখালী গ্রামের কৃষক হাবিবুর রহমান বলেন, চারটি গ্রামের সাতটি ইটভাটা বন্ধ হয়ে গেছে। আবার তাঁরা জমিতে আবাদ করতে পারছেন। ফলনও ভালো হবে বলে আশা করছেন। আগে বাড়িঘরে ধুলার যন্ত্রণায় থাকতে পারতেন না। আর এখন অনেক শান্তি লাগে। কোনো ধুলাবালু ও ধোঁয়া নেই।

কালিয়াকৈর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা সাইফুল ইসলাম বলেন, পরিবেশ অধিদপ্তরের অভিযানের ফলে গত বছর বেশ কয়েকটি ইটভাটা বন্ধ হয়ে গেছে। এ বছর নতুন করে আবার প্রায় ৫০০ বিঘা জমিতে চাষাবাদ শুরু হয়েছে।

গাজীপুর পরিবেশ অধিদপ্তরের উপপরিচালক নয়ন মিয়া প্রথম আলোকে বলেন, আইন অনুয়ায়ী এসব এলাকার অবৈধ ইটভাটা বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। আগে ইচ্ছা থাকলেও ইটভাটার কারণে ওই চার গ্রামের মানুষ চাষাবাদ করতে পারতেন না। তবে এখন এসব জমিতে চাষাবাদ ফিরেছে। পরিবেশের ভারসাম্যও ফিরে এসেছে।
সূত্র : প্রথম আলো


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই ক্যাটাগরির আরো নিউজ